চিরকুমার সভা
বাংলা সাহিত্যে “চিরকুমার সভা”রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক রচিত একটি নাটক।এটি ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। “প্রজাপতির নির্বন্ধ ” উপন্যাসকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর “চিরকুমার সভা” প্রহসন নাটকে রূপান্তরিত করেছেন।
কাহিনীর নাটকীয়তা আর তার সংলাপের রসবোধ সমস্ত নাটকজুড়ে দর্শককে মাতিয়ে রাখে।চিরকুমারদের বিয়ে না করার ভয়ংকর প্রতিজ্ঞা কী করে কিশোরীদের সামান্য স্পর্শেই ভেঙে গেল- তাই কৌতুককরভাবে বর্ণিত হয়েছে ‘চিরকুমার সভা’ নাটকে।
“চিরকুমার সভা”য় চিরকুমার থাকার সংকল্প করে যে সভা প্রতিষ্ঠিত হয়,সেই সভাকেই প্রজাপতির মন্দির বানিয়ে অবিবাহিত ছেলেমেয়েরা মনের মতো পাত্রপাত্রী পছন্দ করে বিবাহটা সেরে নেয়।এখানেই কৌতুক।চিরকুমার সভার সদস্যরা নারী বিবাহ না করার ব্রত নেয়।অথচ পুরুষ প্রকৃতির যে চিরন্তন আকর্ষণ- তা থেকেও চিরকুমার সভার সদস্যরা মুক্ত হতে পারেননি। সভার প্রাক্তন সভাপতি অক্ষয় বাবু অনেক আগেই ব্রত ভেঙ্গে পুরবালার পাণিগ্রহণ করছেন।অবিবাহিত দুই কন্যার বিবাহের জন্য মায়ের দুশ্চিন্তা এবং সঠিক পাত্র যোগাড় করার ব্যর্থতা থেকেই শৈলবালার মাথায় চিরকুমার সভায় হানা দেওয়ার পরিকল্পনা আসে। অন্যদিকে চিরকুমার সভার সভাপতি চন্দ্রবাবু আর তার তিন ছাত্র শ্রীশ, বিপিন ও পূর্ণ দেশের জন্য হন্যে হয়ে উঠেছেন। চন্দ্রবাবুর ভাগ্নি নির্মলা আড়ালে থেকেও চিরকুমার সভার আদর্শকে মনে-প্রাণে ভালবাসেন। তিনিও সন্ন্যাসী হওয়ার ব্রত গ্রহণ করে চিরকুমার সভার সভ্য হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। অথচ নারী সংস্পর্শে আসার পর চিরকুমার সভার তিন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সদস্য শ্রীশ, বিপিন ও পূর্ণ প্রেমে হাবুডুবু খেতে থাকেন। নির্মলাকেও দেখা যায়, অবলাকান্তের প্রেমে মশগুল। পরিস্থিতি বিবেচনায় সভাপতি চিরকুমার সভা থেকে কুমার ব্রত উঠিয়ে দেওয়াই শ্রেয় বলে মনে করেন।
(চিরকুমার সভা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশকঃ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র)
-তাসফিয়া তাসমিন মিশু